কাল বিএনপির মহাসমাবেশ, রাজধানীতে কয়েক শ নেতাকর্মী আটক
বিএনপির মহাসমাবেশে অংশ নিতে আসা কয়েক শ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের জন্য হোটেল, মেস ও বাসাবাড়িতে রাতভর অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। প্রতিনিয়ত আমরা গ্রেপ্তারের খবর পাচ্ছি।
এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তারের প্রকৃত সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। তবে কয়েক শ ছাড়িয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ঢাকা সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার মীর আশরাফ আলী ও তার ছেলে ব্যারিস্টার মুনতাহা আলীকে গতকাল রাতে তাদের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের সময় আশরাফ আলী দুই পা ভাঙাসহ গুরুতর আহত হন।বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ছাড়া বিএনপির মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, রাজশাহী জেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির নেতা আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বলসহ দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করেছে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট।
নয়াপল্টনের কাছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশে মিডওয়ে হোটেল ও ভিক্টোরিয়া হোটেলেও অভিযান চালায় পুলিশ। মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা ৩০০ জনেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে তারা।
নির্বাচন সামনে রেখে গণতান্ত্রিক চর্চার অংশ হিসেবে সমাবেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে পুলিশের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানান রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপি সূত্র জানায়, মিরপুর থানা পুলিশ পাংশা উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি সজিব রাজা, ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন, কলিমহর ইউনিয়ন ছাত্রদলের জাহিদ হোসেন, মৌরাট ইউনিয়ন ছাত্রদলের কনকসহ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। কলাবাগান থানায় গ্রেপ্তার হয়েছেন জয়পুরহাট জেলা শাখা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সদস্যসচিব মঞ্জুরে মওলা পলাশ ও ছাত্রদল নেতা মশিউর রহমান খন্দকার (এ্যালট)।
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিএনপি ও সমমনা দল এবং জোটের পক্ষ থেকে রাজধানীতে ডাকা হয়েছিল মহাসমাবেশ। এর বিপরীতে সরকারদলীয় ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
নির্বাচন কমিশন বাতিলসহ নানা দাবিতে এদিন বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে সমাবেশ করতে চায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
এ ছাড়া বিজয়নগরে প্রতিবাদী অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে এবি পার্টি। ওই দিন বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করে জামায়াতে ইসলামী। একই দিনে কাছাকাছি সময়ে ও স্থানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকে ঘিরে তৈরি হয় উত্তেজনা।
এমন বাস্তবতায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এ অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলোকে কাঙ্ক্ষিত স্থানের বাইরে কর্মসূচি পালনের পরামর্শ দিয়ে কড়া সতর্কাবস্থান নেন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা।