একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও নবীন প্রজন্মর প্রত্যাশা
তাহরিন জাহান নৌশি:
বর্তমানে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ও সুবিধাজনক রাজনৈতিক শাসন ব্যবস্থা হলো গণতন্ত্র। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কিছু বৈশিষ্ট্য হলো বাক-স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, নিয়মতান্ত্রিক শক্তিশালী বিরোধী দল, পরমত ও পরের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, সহনশীলতা, সুষ্ঠু নির্বাচন পদ্ধতি, ব্যক্তি অধিকার ও কর্তব্যের প্রতি নিষ্ঠা স্বাধীনতার পর বিগত ৪৭ বছরে বাংলাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত যত ধরনের নির্বাচন হয়েছে, সব ধরনের নির্বাচনেই সহিংসতায় কমবেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।নুষের কর্মনীতি হতে হবে মানুষ হালাল পথে যা কিছু উপার্জন করে তা বৈধ ও যুক্তিসঙ্গত প্রয়োজন পূরণার্থে ব্যয় করবে। এরপরও যা কিছু উদ্বৃত্ত থাকবে তা অভাবগ্রস্তদের দান করবে যাতে তারা তাদের অপরিহার্য প্রয়োজনে ব্যয় করে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চায় যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলোর সমাধানের মাধ্যমে সুস্থ গণতন্ত্রের চর্চা প্রয়োজন। আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এই নির্বাচন েিক সামনে রেখে নবীন প্রজন্মও প্রত্যাশা অনেক আমরা চাই ডিজিটাল বাংলাদেশে-সুস্থ ধারার পরিচ্ছন্ন গণতান্ত্রিক চর্চার পথ বিকশিত করা। -সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে পরস্পর বৈরী সম্পর্কের অবসান ঘটানো। বিচার বিভাগকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া।সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবার সুযোগ দেয়া।-অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।দুর্নীতি ও সন্ত্রাস বন্ধ করা।জনসাধারণের নিকট জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করা।নির্বাচন কমিশনকে বিশ্বাসযোগ্য, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী করা। তথ্য অধিকার আইনের সংস্কার এবং প্রয়োগ করা। বাংলাদেশের গণতন্ত্র চর্চায় যেমন সমস্যা রয়েছে, তেমনি রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। রাজনীতিতে বহুসংখ্যক শিক্ষিত নেতা প্রয়োজন, প্রয়োজন সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সমঝোতা। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী মধ্যে রয়েছে অসীম একাগ্রতা, যার প্রমাণ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ। যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত দেশের গণতন্ত্র যদি দুর্বল কাঠামোসম্পন্ন হয় তবে তা বাঙালি জাতির জন্য চরম লজ্জাকর। গণতন্ত্র রক্ষা করতে পারলে এদেশে আসবে কাক্সিক্ষত শান্তি ও স্থিতিশীলতা। জনগণ পাবে পূর্ণ স্বাধীনতা ও মুক্ত গণতন্ত্রের স্বাদ। বর্তমানে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ও সুবিধাজনক রাজনৈতিক শাসন ব্যবস্থা হলো গণতন্ত্র। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কিছু বৈশিষ্ট্য হলো বাক-স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, নিয়মতান্ত্রিক শক্তিশালী বিরোধী দল, পরমত ও পরের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, সহনশীলতা, সুষ্ঠু নির্বাচন পদ্ধতি, ব্যক্তি অধিকার ও কর্তব্যের প্রতি নিষ্ঠা ইত্যাদি। গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশের মানুষের আন্দোলন দীর্ঘদিনের। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর এদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের হাত ধরেই গণতন্ত্রের চর্চা শুরু হয়। গত বছরের প্রথমদিকে প্রকাশিত এক জরিপ রিপোর্টে দেখা গেছে, দেশের তরুন প্রজন্মের মধ্যে রাজনীতি সম্পর্কে অনীহা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেড়ে গেছে। তারা রাজনীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ বা বিমুখ হয়ে পড়ছে। তাদের এই রাজনীতি বিমুখতার পেছনে কাজ করছে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবক্ষয় এবং সহিংস রূপ। যেনতের প্রকারে ক্ষমতায় যাওয়া বা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে গিয়ে স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে সরকার পুলিশকে যেভাবে ব্যবহার করেছে, তা কখনো কখনো আইন ও মানবাধিকারকে চরমভাবে লঙ্ঘিত করেছে। আমাদের জাতীয় ইতিহাসের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে এ দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গৌরবজনক ভ’মিকা থাকা সত্বেও শিক্ষাঙ্গণ কখনো এখনকার মত ছাত্র সংগঠনগুলো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি বা চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হতে দেখা যায়নি। বড় রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্র ও শিক্ষক সংগঠনগুলোকে হীন দলীয় স্বার্থে ব্যবহার না করলে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যথার্থরূপে উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও সুযোগ্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে তোলার সূতিকাগারে পরিণত হতে পারত। স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং সামরিক স্বৈরাচার বিরোধি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে বিজয়ী হওয়ার পর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষা, গবেষনা ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে তোলার প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণ ও পরিবেশ ধরে রাখতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।
যেহেতু গণতন্ত্র জনগণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত তাই, গণতান্ত্রিক দেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান ক্ষমতা ও সমান অধিকার থাকে। দেশের নির্বাচিত শাসক জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে থাকে বলে, জনগণের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান তার কাছে মৌলিক বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সেখানে ব্যক্তির চিন্তা ও মানসিক বিকাশের পথ খোলা থাকে। গণতন্ত্রে দেশের জনগণের মানোন্নয়ন, দেশের সমৃদ্ধি আনয়ন, নীতি নির্ধারণ ইত্যাদি জনগণের চাহিদা অনুযায়ী করা হয় বলে এটি সারা বিশ্বে জনপ্রিয় শাসনব্যবস্থা। গণতান্ত্রিক দেশে জনগণের মতামতের প্রাধান্য থাকে বলে, গণতন্ত্রের সুফল আকাশ ছোঁয়া।
লেখক :বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী সিলেট