সিলেটে প্রবাসীসহ মনোনয়ন প্রত্যাশীরা গণসংযোগ করছেন

চলতি বছরটা নির্বাচনের বছর। বছরের শেষ মাসে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সরকারের তরফ থেকে সে রকমই বলা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে সরকারি দলের তোড়জোরও শুরু হয়ে গেছে।

সিলেটে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক অন্তত ২০০ জন তৃণমূল পর্যায়ে গণসংযোগ শুরু করেছেন। এ তালিকায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী থেকে শুরু করে প্রভাবশালী নেতারা পর্যন্ত রয়েছেন। নির্বাচন নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে প্রধান দুই দলের মতানৈক্য থাকলেও তাঁরা দলের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে নির্বাচনী মাঠ গোছাতে মাঠে নেমেছেন বলে জানিয়েছেন।  বৃহত্তর সিলেটের ১৯টি সংসদীয় আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের এ ধরনের ত ৎপরতায় নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন।বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, নির্বাচন ঘনিয়ে আসার কারণে প্রার্থীদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না। বর্তমান সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি মেনে নিতে বাধ্য করা হবে। এ কারণেই বিএনপি মাঠপর্যায়ে পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছেন। এসব প্রবাসী প্রার্থীর ত ৎপরতা সিলেট-২ (বালাগঞ্জ-বিশ্বনাথ), সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ), সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) ও সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) সংসদীয় আসনে সবচেয়ে বেশি বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন। প্রবাসীদের মধ্যে সিলেট-২ আসনের বর্তমান সাংসদ যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ছাড়াও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসী জাতীয় পার্টির নেতা মো. ইয়াহিয়া প্রচারণা চালাচ্ছেন। সিলেট-৩ আসনে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক হাবিবুর রহমান, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোহামঞ্চদ মনির হোসাইন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খালেদ আহমদ এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা আবদুস সালাম প্রচারণা চালাচ্ছেন। সিলেট-৬ আসনে কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার আহমদ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা রশিদ উদ্দিন চৌধুরী, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফয়সল আহমদ চৌধুরী এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসী জাতীয় পার্টি নেতা সেলিম উদ্দিন প্রচারণা চালাচ্ছেন। সুনামগঞ্জ-২ আসনে শ্রমীকলীগের যুুক্তরাজ্য প্রবাসী সামছুল হক চৌধুরী এরই মধ্যে  নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন।

সুনামগঞ্জ-৩ আসনে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাবেক যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর আহমদ ও সৌদিপ্রবাসী বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন প্রচারণা চালাচ্ছেন। সুনামগঞ্জ-৫ আসনে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আইয়ূব করম আলী প্রচারণা করছেন। হবিগঞ্জ-১ আসনে কানাডাপ্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জন দাশ, মৌলভীবাজার-৩ আসনে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুর রহিম শহীদ প্রচারণা চালাচ্ছেন।

এলাকাবাসী জানান, নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ত ৎপরতা ততই বেড়ে চলছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ঘন ঘন এলাকায় গিয়ে গণসংযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। অনেক প্রার্থী এলাকার বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি অনুদান দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসনের সাংসদ এম এ মান্নান  জানান, নির্বাচনের আর মাত্র চার-পাঁচ মাস বাকি। ফলে এ সময়টাতে নির্বাচনী প্রচারণার জোয়ার হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন তৃণমূল পর্যায়ে সরকারের সাফল্য তুলে ধরছেন। ধর্মীয় কিছু সংগঠন সরকারের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালিয়েছিল, সেগুলোও খণ্ডন করে নাগরিকদের সঠিকভাবে বোঝানো হচ্ছে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিলেটের ১৯টি আসনে স্থানীয় সাংসদদের পাশাপাশি প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী দলের টিকিট পেতে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছেন। প্রত্যেকে নিজের গুরুত্ব ও জনসমর্থন দেখাতে দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচির আয়োজন করছেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির ২০০ সম্ভাব্য প্রার্থীর পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশসহ বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক দলের সাত নেতা নির্বাচনে অংশ নিতে তৃণমূল পর্যায়ে প্রচারণা শুরু করেছেন।

 

এ বিভাগের অন্যান্য