অমানুষিক নির্যাতনের পর কোদাল দিয়ে চুল কামানো হলো কিশোরের!

বাজার থেকে ডেকে নিয়ে গরু চুরির অপবাদে ছৈয়দ আহমদ (১৭) নামের এক কিশোরকে বেঁধে রাতভর অমানুষিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। তার গলায় ঝুলানো হয়েছে জুতার মালা! শুধু তাতে শেষ নয়, কোদাল দিয়ে তার মাথার চুলও কামিয়ে দেয়া হয়েছে।

অমানবিক দৃশ্যটি উপভোগ করেছে নির্যাতনকারীসহ বেশ কিছু লোক। এ সময় শিশু-কিশোর এবং নারীরাও উপস্থিত ছিল। শুক্রবার রাত দশটার দিকে উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং পশ্চিম সোনার পাড়া মোনাফ মার্কেট এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

পরদিন শনিবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে ওই যুবককে কিশোরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ভিকটিম ছৈয়দ আহমদ পশ্চিম সোনারপাড়া এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে। ঘটনায় জড়িত কেউ আটক হয়নি।

একই এলাকার শামসুল আলমের ছেলে জালাল উদ্দিন (৩৫) এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। জালাল উদ্দিন মানবপাচারসহ বহু মামলার আসামী।

ঘটনার প্রসঙ্গে জালিয়া পালং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার রফিকুল্লাহ জানান, ছৈয়দ আহমদ একজন ক্ষুদ্র দোকানদার। মুহাম্মদ নামের এক ব্যক্তির গরু চুরির অভিযোগে তাকে বাজার থেকে ধরে নিয়ে বেঁধে রাখে। খবর পেয়ে তিনি নিজেই গিয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেন। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাকে বিষয়টি তাৎক্ষণিক মৌখিক অবগত করেন।

তিনি জানান, যে গরুটি চুরির অভিযোগ করা হয় সে গরুটি মুহাম্মদের বাড়িতেই ছিল। তবু অপরাধী হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে মারধর না করতে অনুরোধ করেন মেম্বার রফিকুল্লাহ। তা মানেনি। গরুর মালিক মুহাম্মদের ডাকে পাশের বাড়ির বাসিন্দা জালাল উদ্দিন সেখানে গিয়ে উল্টো বিতর্ক করে বসে। তার সঙ্গে যোগ দেয় আরও কয়েকজন।

বাকবিতণ্ডার পর বাড়িতে চলে যান মেম্বার। শনিবার সকালে খবর পান, কোদাল দিয়ে ছৈয়দের মাথা মুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। রাতভর মারধরসহ অমানুষিক নির্যাতন করেছে। এমন একটি ভিডিও হাতে পান তিনি।

এরপর মেম্বার রফিকুল্লাহ গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) জাহাঙ্গীর, আবু সিদ্দিককে সঙ্গে নিয়ে মুহাম্মদের বাড়ি থেকে ছৈয়দ আহমদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনাটি তিনি থানার ওসিকে জানিয়েছেন।

অভিযুক্ত জালাল উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এলাকায় যাতে আর কোনো সময় গরু চুরির মতো ঘটনা না ঘটে, পুরো এলাকাবাসীকে শিক্ষা দেয়ার জন্য এটি করা হয়েছে। তাতে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নাই।

এ বিষয়ে উখিয়া থানার নবাগত ওসি আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ বলেন, আমি মাত্র দায়িত্ব নিলাম। এখনো এই ধরনের অভিযোগ আমার কাছে আসেনি৷

এ বিভাগের অন্যান্য