স্থায়ী ক্যাম্পাসে ফিরছে রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

পর্যায়ক্রমে রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে উঠছে। অস্থায়ী ক্যাম্পাস দিয়েই যাত্রা শুরু হয় তিন পার্বত্য জেলার সর্বপ্রথম এ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির।

বর্তমানে স্থায়ী ক্যাম্পাসে নির্মিত হচ্ছে নিজস্ব ভবন ও স্থাপনা। ইতোমধ্যে কয়েকটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ শেষ হয়েছে। তবে দাফতরিক কার্যক্রম এখনও চলছে অস্থায়ী ভবনে। করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও বর্তমানে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

কর্তৃপক্ষ জানায়, পর্যায়ক্রমে স্থায়ী ক্যাম্পাসে নির্মিত হচ্ছে রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনগুলো। তবে জমি অধিগ্রহণ এখনও সম্পন্ন হয়নি। রাঙ্গামাটি সদরের মগবান ইউনিয়নের ঝগড়াবিল মৌজায় প্রায় ৬৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

অধিগ্রহণ করা জমিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির চারটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেই নিজস্ব ক্যাম্পাসে পরিচালিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম।

বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে। শুরুতে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হয়েছে ভাড়া ঘরে। বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে ২০১৪ সালে রাঙ্গামাটি সদরের মগবান ইউনিয়নের ১০৪ নম্বর ঝগড়াবিল এবং ১০৮ নম্বর মানিকছড়ি মৌজায় ১০০ একর জমি নির্বাচন করা হয়।

পরে জরিপ শেষে মগবান ইউনিয়নের ঝগড়াবিল মৌজায় প্রায় ৬৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অবশিষ্ট জমির অধিগ্রহণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

এতে সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছেন একই ইউনিয়নের মানিকছড়ি মৌজার কিছু বাসিন্দা। অধিগ্রহণ নিয়ে চূড়ান্ত না করায় সিদ্ধান্তহীনতায় এসব জমির মালিক। চাষাবাদও করতে পারছেন না তারা। তারা বিষয়টির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট জমির মালিক সাবেক ইউপি সদস্য নিরোদ কুমার তঞ্চঙ্গ্যা ও তমু চাকমা বলেন, আমরা রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিগ্রহণভুক্ত এলাকার মানিকছড়ি মৌজার বাসিন্দা। বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য আমাদের জমি অধিগ্রহণ করার কথা কিন্তু বিষয়টির এখনও চূড়ান্ত কিছুই বলা হচ্ছে না।

রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য ১০০ একর জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত রয়েছে। এজন্য বরাদ্দ ছিল ২৬ কোটি টাকা। কিন্তু পরে ন্যায্যমূল্য অনুযায়ী কেবল ৬৪ দশমিক ৭৭ একর জমির অধিগ্রহণ করতে হয়েছে প্রায় ৬৪ কোটি টাকায়। উপযুক্ততা দেখে অবশিষ্ট জমি অধিগ্রহণ করা হবে।

ভিসি আরও জানান, স্থায়ী ক্যাম্পাসে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে আপাতত চারটি অস্থায়ী ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে ভবনগুলো স্থায়ীভাবে নির্মিত হবে। ভবনগুলোর মধ্যে দুটি একাডেমিক, একটি লাইব্রেরি এবং একটি কনফারেন্স হল করা হয়েছে। শ্রেণিকক্ষের সমস্যা দূর হয়েছে।

তিনি বলেন, গত বছর নভেম্বর থেকে নিজস্ব ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছি কিন্তু করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে শহরের তবলছড়ির শাহ উচ্চবিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একটি ভবনে ভাড়ায় শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হয়েছে। বর্তমানে পাঁচ ব্যাচে ৪৫০ শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে। কম্পিউটার সায়েন্স এবং ম্যানেজমেন্ট বিষয় নিয়ে শ্রেণী কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল।

চলতি শিক্ষাবর্ষে আরও তিনটি বিষয়- ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট এবং ফিশারিজ বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। দাফতরিক কাজ চলছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড থেকে নেয়া অস্থায়ী ভবনে। স্থায়ী ক্যাম্পাসে দাফতরিক ভবন নির্মাণ হচ্ছে। গত আগস্ট থেকে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।

এ বিভাগের অন্যান্য