চমেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন শুরু করছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশন।
বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রলীগের একপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে ফেরার পথে এ হামলার শিকার হন ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ডা. ওসমান গনি ও চমেক ছাত্র সংসদের সাহিত্য বিভাগের সম্পাদক সানি হাসনাইন প্রান্তিক।
মূলত হামলার শিকার নেতারা সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। অপরপক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল অনুসারী বলে পুলিশ জানিয়েছে।
হামলার শিকার ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বর্তমানে চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় শুক্রবার সকাল ১০টায় চমেক হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের এ কর্মবিরতিতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা ভোগান্তিতে পড়েন।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতেই হামলার ঘটনায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পক্ষে চমেক ছাত্র সংসদের ভিপি ডা. মোস্তফা আনোয়ারুল আউয়াল বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে পুলিশ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ডা. মো. তাজওয়ার রহমান খান যুগান্তরকে বলেন, কিছু ছাত্র কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে ছাত্রাবাসে অবস্থান করছিল। এ নিয়ে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার চকবাজার থানায় একটি অভিযোগ দেয়া হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে থানা থেকে ফেরার পথে গুলজার মোড়ে অভিযুক্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন ডা. ওসমান গনি ও সানি হাসনাইন প্রান্তিক।
তিনি আরও বলেন, হামলার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছেন চমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। দোষীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় না আনা পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
শুক্রবার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক যুক্ত বিবৃতিতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খান এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর হামলাকারী ছাত্র নামধারী দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতার এবং কলেজ হতে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন। এ ঘটনায় বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার নেতারা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
চকবাজার থানার ওসি মো. রুহুল আমিন যুগান্তরকে বলেন, বৃহস্পতিবার চমেক প্রধান ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুইপক্ষে মারামারির পর থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পরে একপক্ষের হামলায় দুইজন ইন্টার্ন চিকিৎসক আহত হন। এ ঘটনায় থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়েরের পর ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের নিয়ন্ত্রণে ছিল চমেক ছাত্রলীগ। সম্প্রতি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী একটি পক্ষ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এরপর থেকেই আধিপত্য বিস্তারের জেরে হামলা-মামলার একাধিক ঘটনা ঘটেছে।