রাজশাহীর চাঞ্চল্যকর শিশু আলিফ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার চাঞ্চল্যকর সাত বছর বয়সী শিশু আজমাইন সারোয়ার আলিফ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত এক নারীসহ দুজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ওই নারী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শিশু আলিফ উপজেলার চকশিমুলিয়া গ্রামের মো. তারেকের ছেলে। গত ৯ আগস্ট কালুহাটি এলাকায় বড়াল নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় শিশু আলিফের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করেছিলেন আলিফের মা চম্পা বেগম। পাঁচ দিনের মধ্যে পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে।
শিশু আলিফকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার দুজন হলেন- চকশিমুলিয়া গ্রামের পারভীন বেগম (৩৫) ও আজাদ আলী (৪২)। এদের মধ্যে পারভীন নিহত শিশু আলিফের মামি। আর আজাদ হলেন পারভীনের সহযোগী।
রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম শুক্রবার দুপুরে জানান, থানায় হত্যামামলা দায়েরের পর আসামি পারভীনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে রিমান্ডে নিয়ে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশের জেরার মুখে পারভীন হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সব খুলে বলেন। তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আজাদকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, পারভীন এবং তার গ্রামের মাদকাসক্ত ব্যক্তি আজাদ গত ৭ আগস্ট শিশু আলিফকে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক পরদিন শিশুটিকে কোলে নিয়ে পারভীন তার বাড়ির সামনে রাস্তায় আগে থেকেই অপেক্ষমান আসামি আজাদের কাছে হস্তান্তর করেন।
এরপর আজাদ শিশুটিকে বড়াল নদীতে ফেলে দিয়ে তার শরীরে থাকা রুপার চেইন ও কোমরের বিছা আসামি পারভীনকে এনে দেন। এ সময় পারভীন আজাদকে ৩০০ টাকা দেন।
আসামি পারভীনকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে তার বসতবাড়ির ভেতর আঙিনায় লিচুগাছের তলায় আবর্জনার স্তূপের নিচে মাটিতে পুতে রাখা অবস্থায় শিশু আলিফের গলার চেইন ও কোমরের বিছা উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার আসামি পারভীন দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাকে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন। আসামি আজাদকেও আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
হত্যার রহস্য উদঘাটন হওয়ায় দ্রুত মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলেও জানিয়েছেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম।