কচুরলতি বিক্রি করে স্বাবলম্বী মকবুল

ময়মনসিংহের ত্রিশালের কচুরলতি সারা দেশে বিখ্যাত। এ লতি ও কচু যাচ্ছে দেশ-বিদেশেও। একসময়ের গরিবের খাদ্য কচু ও কচুরলতি বিক্রি করে আজ স্বাবলম্বী হয়েছেন ত্রিশালের কৃষক মকবুল হোসেন।

মকবুল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বীর রামপুর গ্রামের মৃত আবদুল আলীমের ছেলে।

জানা যায়, বাজারে লতির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্রিও হয় ধুমধাম। গত ১৫ বছর আগে লতির ব্যবসা শুরু করেন মকবুল। সেই সময় লতি চাষ করে কোনোরকম চলত তার সংসার। অভাবী সংসারে এক ছেলে তিন মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন মকবুল হোসেন। থমকে না গিয়েও কঠোর পরিশ্রম করে গেছেন তিনি।

বর্তমানে তিনি কচু ও লতি চাষ করার পাশাপাশি পাইকারি ব্যবসা করে এলাকায় জমি ক্রয় করে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার খরচসহ সংসার চালাচ্ছেন সাচ্ছন্দে। এখন আর অভাব কি জিনিস তার পরিবারের সদস্যদের বুঝতে হয় না।

ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ দিয়েও সুখেই জীবন কাটাচ্ছেন মকবুল হোসেন।

তিনি বলেন, আমি কৃষকদের কচু ও লতিক্ষেত ক্রয় করে ঢাকার কারওয়ানবাজার, গাজীপুর, টঙ্গী স্লুইসগেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করি।

আমি মূর্খ মানুষ, কিন্তু আমার স্বপ্ন আছে– আমি যেন আমার ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করিয়ে অনেক বড় অফিসার বানাতে পারি। আমার বৃদ্ধ মায়ের চিকিৎসাসহ চার ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ দিয়ে আমার যে আয় থাকে, তাতে সুখেই চলছে আমার সংসার জীবন।

লতি ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন আরও জানান, আমার লতির ব্যবসায় ১৫ শ্রমিক কাজ করেন। এতে তাদের সংসারও চলছে ভালোভাবেই।

রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণি পড়ুয়া রহিম জানায়, লেখাপড়ার পাশাপাশি মকবুল হোসেন চাচার সঙ্গে লতি বান্ডেলের কাজ করছি। আমাকে প্রতিদিন ৩০০ টাকা দেন। এতে শুধু আমার লেখাপড়ার খরচই চলছে না, আমার সংসারের খরচেরও জোগান হচ্ছে।

কৃষক মকবুল হোসেন জানান, আমার এখানে ১৫-২০ শ্রমিক কাজ করে। তাদের সংসার চলছে ভালোভাবে।

স্থানীয় আরেক কৃষক ইউনুস আলী জানান, কচু ক্ষেত করে আমরা তিন মাস লতি বিক্রি করি। প্রতি সপ্তাহে লতি না উঠালে কচু ক্ষেতে নতুন করে চারা গজিয়ে আগাছা জন্ম নেয়।

তিনি জানান, আমার ৬ কাঠা জমিতে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৮ হাজার টাকার লতি বিক্রি করি। মাসে ৩২ হাজার টাকার লতি বিক্রি করি। লতি বিক্রি শেষ হলেই কচু বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে।

এ বিভাগের অন্যান্য