কোরবানি ঈদ সামনে রেখে অস্থির মসলার বাজার

নিউজ ডেস্ক: কোরবানি ঈদ সামনে রেখে অস্থির হয়ে উঠেছে বেশিরভাগ মসলার দাম। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে আমদানিকৃত মসলা পণ্য এলাচের। এ ছাড়া পেঁয়াজ, আদা, রসুন, শুকনা মরিচ, জিরা, দারুচিনি ও জত্রিকসহ প্রায় সব মসলা পণ্যের বাজার দুই সপ্তাহ ধরে ঊর্ধ্বমুখী। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজেটে এআইটি (আগাম শুল্ককর) যোগ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে মসলা পণ্যের বুকিং দর বাড়ায় পাইকারি বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।

একই সঙ্গে কোরবানি ঈদের মৌসুমে চাহিদা বাড়ায়ও দামের পরিবর্তন হয়েছে। জানা গেছে, পেঁয়াজ, রসুন, হলুদ, এলাচ, আদা, মরিচ, ধনিয়াসহ বহু মসলাপণ্যের চাহিদার সিংহভাগ আগে দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমেই পূরণ করা হতো; কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে উৎপাদন মৌসুমে দেশীয় মসলা পণ্যের দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের লোকসান গুনতে হয়। এতে মসলা উৎপাদন থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন অনেক কৃষক। ফলে চাহিদা মেটাতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে মসলাপণ্যে আমদানি-নির্ভরতা বাড়ছে।

এ ছাড়া কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বাড়তি চাহিদার অজুহাতে একশ্রেণির অসাধু চক্রও অস্থির করে তুলেছে বাজার। মসলা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স এবি ট্রেডার্সের মালিক অমর কান্তি দাস বলেন, গত এক মাস ধরে পাইকারি বাজারে আমদানিকৃত বেশিরভাগ মসলাপণ্যের বাজার অস্থির। এ ছাড়া প্রতিবছর বাড়তি চাহিদার কারণে কোরবানি ঈদের আগে মসলা পণ্যের বাজার অস্থির হয়। তবে বছর বছর দেশীয় মসলাপণ্যের উৎপাদন কমে আমদানি-নির্ভরতা বাড়াই বাজার অস্থির হওয়ায় প্রধান কারণ বলে মনে করেন তিনি।

বাজেটে এআইটি যোগ হওয়ার কারণে আমদানিকারকদের যে খরচ বেড়েছে সে অনুযায়ী মসলাপণ্যের দাম বেড়েছে বলে জানান খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সভাপতি সোলায়মান আলম বাদশা। এদিকে কোরবানির আগে মসলার বাজারে নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দর বৃদ্ধির অজুহাতে কিছু মুনাফালোভী ও সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ী কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে অতিরিক্ত মুনাফা করতেই মসলার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। মসলার আড়ত ও পাইকারি দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বর্তমানে প্রতিকেজি আমদানিকৃত এলাচ বিক্রি হচ্ছে ২২০০-২২৭০ টাকায়, যা এক মাস আগেও ১৭০০-১৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে প্রতিকেজি জত্রিক বিক্রি হচ্ছে ২২৫০-২৩০০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগেও বাজারে পণ্যটির দাম ছিল মাত্র ১৯০০-২০০০ টাকা।

পাইকারি পর্যায়ে প্রতিকেজি আমদানিকৃত দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০-৩৭০ টাকা। অথচ পনেরো দিন আগেও বাজারে একই মানের দারুচিনির প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ২৫০-২৭০ টাকা। একইভাবে প্রতিকেজি ভারতীয় জিরা কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩১০-৩২০ টাকা। তুরস্ক ও সিরিয়া থেকে আমদানি করা জিরা বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকায়। এ ছাড়া এক মাস ধরে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও শুকনা মরিচের দাম। বর্তমানে পাইকারি বাজারে চীন থেকে আমদানিকৃত রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৪০-১৪৫ টাকায়, যা পনেরো দিন আগেও ১১০-১২০ টাকার মধ্যে বিক্রি হতো।

দুই সপ্তাহ আগে বাজারে আদা বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকার নিচে, এখন কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়ে একই আদা বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকা দামে। দীর্ঘদিন ধরে পেঁয়াজের কেজি ছিল ১৮ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে। কিন্তু গত এক সপ্তাহে দফায় দফায় বেড়ে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম ঠেকেছে ৩২ টাকায়।সূত্র:আমাদেরসময়

এ বিভাগের অন্যান্য