সিলেটের চারজেলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হবে দুই ধাপে

স্টাফ রিপোর্ট:

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা আগামী ১০ মে থেকে শুরু হচ্ছে। পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত এ পরীক্ষা সিলেট বিভাগের চারটি জেলায় দুই ধাপে অনুষ্টিত হবে। প্রতিটি ধাপের পরীক্ষা শুক্রবারে আয়োজন করা হবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজস্ব খাতভুক্ত ‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০১৮’ জেলাওয়ারী প্রার্থী সংখ্যা ও পরীক্ষা আয়োজনের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ৫ ধাপে সব জেলায় নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে সিলেট বিভাগের সবকয়টি জেলার পরীক্ষা সম্পন্ন হবে। দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা অনুষ্টিত হবে ১৭ মে (শুক্রবার) আর তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৪ মে (শুক্রবার)।
প্রত্যেক ধাপের নিয়োগ পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত (দেড় ঘণ্টা) অনুষ্ঠিত হবে। তবে এই সময়সূচি পরিবর্তিত হতে পারে। পরীক্ষা-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য প্রত্যেক প্রার্থীকে পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে।
জানা গেছে, ‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০১৮’ এ পরীক্ষা দিতে সিলেট জেলা থেকে ৫০ হাজার ৩৭০টি আবেদন জমা পড়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জ থেকে ৩৫ হাজার ৫১২, হবিগঞ্জ থেকে ৩৩ হাজার ৪৭৫ ও মৌলভীবাজার থেকে ৩২ হাজার ১০৬ টি আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনকারীদের পরীক্ষা উপজেলারওয়ারী ভাবে অনুষ্টিত হবে। দ্বিতীয়ধাপে ১৭ মে চারটি জেলার আংশিক উপজেলার পরীক্ষা সম্পন্ন হবে। এরমধ্যে সিলেটের ২৫ হাজার ৯৪৬ পরীক্ষার্থী বসবেন পরীক্ষায়। তারমধ্যে সিলেট জেলার সদর উপজেলায় (৯৮৯০), কানাইঘাটের (৩৬৮৮), বালাগঞ্জের (৪৮৯৮), বিশ্বনাথের (৩৫৩৩), ফেঞ্চুগঞ্জের (১৭৩৪), জৈন্তাপুরের (২২০৩) পরীক্ষার্থী রয়েছে। একই দিন সুনামগঞ্জের ১৭ হাজার ২৮৯ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবেন। এরমধ্যে সদরের (৪৫২৩), দোয়ারাবাজারের (২৬৮৯), বিশ্বম্ভরপুরের (২৪৩৮), ছাতকের (৫৭২৭), শাল্লা (১৯১২)। এছাড়া ওইদিন হবিগঞ্জের ১৬ হাজার ১৭০ পরীক্ষার্থী রয়েছেন। এরমধ্যে সদরের (৫৮৬০), নবীগঞ্জের (৫৫৯১), লাখাইয়ের (২১০৮), বাহুবল (২৬১১)। আর মৌলভীবাজারের চার উপজেলার ১৫ হাজার ৫২২ পরীক্ষার্থী অংশ নেবেন। এরমধ্যে রাজনগরের (৩৬২১), কমলগঞ্জের(৪৫৪৪), শ্রীমঙ্গলের (৪৮১৯), জুড়ির (২৫৩৮)।
এদিকে, তৃতীয় ধাপে ২৫ মে বিভাগের বাকি সবকয়টি উপজেলার নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হবে। এরমধ্যে সিলেট জেলার ৬ উপজেলার ২৪ হাজার ৪২৫ পরীক্ষার্থী অংশ নেবেন পরীক্ষায়। এরমধ্যে গোয়াইঘাটের (৩৫৩৭), গোলাপগঞ্জের (৬১৭৩), কোম্পানীগঞ্জের (১৩৮৮), জকিগঞ্জের (৪৫৮৭), বিয়ানীবাজারের (৪২৪১) ও দক্ষিণ সুরমার (৪৪৯৯) পরীক্ষার্থী রয়েছেন। সিলেট জেলা ছাড়াও সুনামগঞ্জের ৬ উপজেলায় অনুষ্টিত হবে এ পরীক্ষা। এসব উপজেলায় পরীক্ষার্থী সংখ্যা ১৮ হাজার ২২২ জন। তারমধ্যে রয়েছেন তাহিরপুরের (২৬০৯), জামালগঞ্জের (২৪০৫), ধর্মপাশার (৩৮১৬), দিরাইয়ের (৩৫২৮), জগন্নাথপুরের (৩৭২৩), দক্ষিণ সুনামগঞ্জের (২১৪১)। এছাড়া হবিগঞ্জের ৪ উপজেলার ১৭ হাজার ৩০৬ পরীক্ষার্থী একই দিন পরীক্ষায় বসবেন। এরমধ্যে বানিয়াচংয়ের (৫০১২), আজমেরীগঞ্জের (১৮৫০), মাধবপুরের (৪৯৯৪), চুনারুঘাটের (৫৪৫০)। তাছাড়া একই দিন মৌলভীবাজারের ৩ উপজেলার ১৬ হাজার ৫৮৪ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা অনুষ্টিত হবে। এসব উপজেলার মধ্যে সদরের (৫৬৯৬), বড়লেখার (৪২১৬) ও কুলাউড়ার (৬৬৭২) জন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল মান্নান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১০ মে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবার প্রার্থী বেশি থাকায় ৫ ধাপে নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, এবার নিয়োগ পরীক্ষা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তত্ত্বাবধানে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে নেয়া হবে। নির্ধারিত জেলায় পরীক্ষার আগের রাতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে প্রশ্নপত্রের সব সেট পাঠানো হবে। পরীক্ষার দিন সকাল ৮টায় প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে তা কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া হবে। পৌর এলাকার মধ্যে এবার পরীক্ষা নেয়া হবে। আবেদনকারীর আসন বুয়েট অত্যাধুনিক সফটওয়ারের মাধ্যমে নির্ধারণ করবে। একই সঙ্গে আবেদনকারীর আসন বণ্টন অনুযায়ী প্রশ্নের সেট নির্ধারণ করে দেবে। ফাঁস ঠেকাতে এবার ২০ সেট প্রশ্ন তৈরি করা হবে।
সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩০ জুলাই ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ১ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন কার্যক্রম শেষ হয়। ১২ হাজার আসনের বিপরীতে সারাদেশ থেকে মোট ২৪ লাখ ১ হাজার ৫ প্রার্থী আবেদন করেন। সে হিসাবে প্রতি আসনে লড়বেন ২০০ জন।

এ বিভাগের অন্যান্য