পাল্টে যাচ্ছে নির্বাচনী হালচাল নানাবিদ সমস্যায় জর্জরিত সিলেট সিটি

মবরুর আহমদ সাজু:

 

চারদিকে সাজসাজ রব  ব্যপক উৎসাহ উদ্দিপনা নগর কেন্দ্রিক কেবল আলোচনা ৩০ জুলাই সিসিক  নির্বাচন।   এদিকে নির্বাচন কে সামনে রেখে উৎসবের জোয়ারে বাসছে নগরবাসী আর জেলা নির্বাচন কমশিন ও সব প্রস্ততি নিচ্ছে টএকটি অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন পরিচালনা করার জন্যে।   এদিকে শেষ পর্যায়ে এসে জমে উঠছে সিসিক নির্বাচন নগরের পরা মহল্লায় আলোচনা সমালোচনার ধমকা হাওয়া।   দিন যতই ঘনিয়ে আসছে নগরবাসী যেন একট্রা হয়ে উঠছে , নির্বাচন কে ঘিরে নগর জোড়ে নৌকা আর কামরান, আরমাত্র সাতদিন বাদেই ৩০ জুলাই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সিটি করপোরেশন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন।  নির্বাচনকে সামনে রেখে উঠে এসেছে সিলেটের বিভিন্ন সমস্যার কথা। নগরবাসীর অনেকেরই মতে যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে প্রতিষ্ঠানটি নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। নগরবাসীদের খেদোক্তি- ‘এখানে সেবা নেই, আছে দুর্ভোগ’। নগরবাসীর অভিযোগ- অপরিকল্পিত নগরায়নের কুফল ভোগ করতে হচ্ছে তাদের। দূষণ, যানজট, জলজট, খানাখন্দকে ভরা রাস্তা-ঘাট, রাতে আলোবিহীন ভূতুড়ে পরিবেশ- এসবই তাদের নিত্য সঙ্গী।

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০১ সালে এবং ২৭টি ওয়ার্ড ও ২৬.৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে যাত্রা শুরু করে ওই বছরের ৩১ জুলাই। তবে ২০০১ সালে সিটি করপোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরু হলেও সিসিকের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৩ সালে। জেলা নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ গত ২০১৩ সালের ১৫ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) নির্বাচন হয়।  নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কথা বলে দেখা গেছে, একটি নতুন সিটি করপোরেশনকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে আসার জন্য যে জবাবদিহিতা ও গতিশীল নেতৃত্ব প্রয়োজন তার অনুপস্থিতির কারণে নগরবাসী আজ নানা সমস্যায় জর্জরিত। এ কারণে মহানগরীতে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠছে স্থাপনা, বাসা-বাড়ি, ।  অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণে পরিকল্পিতভাবে ড্রেন নির্মাণ করা হয়নি কোথাও। অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে সামান্য বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। যানজট এখন যেন নগরবাসীর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই খানাখন্দে ভরা এই রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে যায়, চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে ।  আসন্ন নির্বাচনেজয়ের ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বলেন,জনগণের ভালোবাসা পেতে সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকতে হয় নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় আছে।  ‘সুরমা তীরের সিলেট হবে টেমস তীরের লন্ডন’ “নগরবাসীকে আমি হৃদয় দিয়ে ভালোবাসি। তবে নগরবাসীর হৃদয়ে কতটা স্থান পেয়েছি তা নগরবাসীই জানেন।” এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে বুঝা যায় প্রার্থীদের মধ্যে  নৌকায় এগিয়ে আছে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী বদর উদ্দিন  আহমদ কামরান ।  মোঃ রশিদ নামে এক এনজিও কর্মী বলেন, কামরান সাব খুবই ভাল মানু্ষ। সিলেটের বাইরে থেকে আমরা যারা এখানে এসে থাকি কাজ করি, তিনি আমাদের সাথেও দেখা করে কথা বলেছেন।ভোট চেয়েছেন। তার কথাবার্তা ও আমাদের ভাল লেগেছে।  বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়েও শান্তিতে ছিলেন না সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। দলের নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মাঠে থাকায় বেকাদায় ছিলেন তিনি। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে নানা কারণে এমনিতেই তার দূরত্ব রয়েছে। সেলিম প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু তারপরও সক্রিয়ভাবে মাঠে নামেননি তৃণমূলের কর্মীরা। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার বদরুজ্জামান সেলিম এক সংবাদ সম্মেলনে দলীয় প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এর ফলে সেলিম ফিরে পেয়েছেন দলীয় পদ আর আরিফ রয়েছেন স্বস্তিতে। এবার আরিফের প্রচারণায় গতি আসবে এমনটি মনে করছেন নগর বিএনপির নেতারা। তারা মনে করেন, আরিফ এবারো বিপুল ভোটে জয়ী হবেন। এখানে জামায়াতের ভোট কোনো ফ্যাক্টর নয়।জামায়াতের মহানগর আমির অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের পক্ষে শুরু থেকেই বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থক মাঠে নেমে কাজ করছেন। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তাদের কাজ অব্যাহত রয়েছেকামরান বলেন, ‘যে মুখে বলে এক, আর অন্তরে লালন করে আরেক, তাকে মানুষ পছন্দ করে না। কাজ করতে হবে সবার শান্তি ও কল্যাণে। সন্ত্রাস-লুটপাট করে, হুমকি-ধামকি দিয়ে এবং নাটক সাজিয়ে কখনো মানুষের সমর্থন আদায় করা যাবে না।তিনি বলেন,  সন্ত্রাস ও লুটপাটসহ জনকল্যাণ বিরোধী কাজে সম্পৃক্ত কেউ কেউ একের পর এক মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। নষ্ট করতে চাইছেন নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। তবে তার বিশ্বাস শান্তিপ্রিয় সিলেট নগরবাসী কারো ধোকাবাজিতে বিভ্রান্ত হবেন না। তারা ৩০ জুলাই নৌকা প্রতীকের পক্ষে রায় দিয়ে আধুনিক সিলেট নগরী গড়ার কাজে সম্পৃক্ত হবেন।

 

এ বিভাগের অন্যান্য